চাঁদা না দেওয়ায় আ‘লীগ নেতাকে মারপিট

চাঁদা না দেয়ায় মানিকগঞ্জের আটিগ্রামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে।

গত মঙ্গলবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজিজুল ইসলামকে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে অভিযুক্তরা। এ ঘটনায়  আজিজুলের ভাই সফিকুল ইসলাম দেওয়ান দশজনকে আসামী করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

আসামীরা হলেন- মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের মাহফুজুর রহমান, রাহুলউজ্জামান ইমন, হিরা ভূইয়া, আব্দুর রহমান, আবু ছালিম, মনির হোসেন, ছানোয়ার ভূইয়া, আব্দুস ছামাদ, তামিম হোসেন ও রবিউল। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সফিকুল ইসলাম দেওয়ান দীর্ঘদিন ধরে নূর সঞ্চয় সমবায় সমিতির মাধ্যমে এলাকায় ঋণ কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। মাহফুজুর রহমান ও রাহুলউজ্জামান ইমন ৫/৬ মাস যাবৎ তার কাছে চাঁদা দাবী করে আসছিল। বিভিন্ন সময়ে এলাকার মুরুব্বীদের কাছে এ বিষয়ে বিচার চেয়েও কোন প্রতিকার পাননি সফিকুল। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার দিকে আটিগ্রামের বলাকা সংসদ ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সেসময় মাহফুজ ও ইমনসহ আরো অনেকেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে ঘেরাও করে। কেন এমন করছে জানতে চাইলে মাহাফুজ তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আর পাশে থাকা সকলেই বলে টাকা না দিলে তাকে হত্যা করবে এবং ব্যবসা বন্ধ করে দিবে।

চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আব্দুর রহমান তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার হাতুরি দিয়ে সফিকুলের মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে। আঘাত ফেরাতে গেলে ডান হাতের বাহুতে জখম হয় সফিকুলের। ডাক চিৎকারে সফিকুলের ভাই আজিজুল এগিয়ে আসলে ইমন লোহার হাতুরি দিয়ে আজিজুলের মাথায় আঘাত করে। এবং অন্যান্যরা তাকে লোহার রড, কাঠের বাটাম দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী পিটিয়ে গুরুতর জখম করে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

অভিযোগকারী সফিকুল ইসলাম দেওয়ান জানান, স্থানীয় যুবলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান ও আটিগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহুলউজ্জামান ইমন বলাকা সংসদ ক্লাবের সামনে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের মাহফুজ ও ইমনের নেতৃত্বে আমার ও আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে। আমি সাধারণ চিকিৎসা নিলেও আমার ভাই গুরুতর আহত অবস্থায় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় আমি ১০ জনকে আসামী করে আজ সকালে সদর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।

আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য তৈয়ব আলী জানান, ‘আমি দেখতে পেলাম কিছু ছেলে হাতুড়ি, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারির জন্য ঘুরাঘুরি করছে। আমি দুরে ছিলাম, হট্টগোল দেখে মারামারি ফেরানোর চেষ্টা করি। পরে যারা মারছে তাদের কাছ থেকে বড় একটি হামার কেড়ে পরিষদের চৌকিদারের কাছে রেখেছি আলামত হিসেবে। কেন মারছে, কি কারনে মারছে তা আমি জানিনা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমানের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে, রাহুলউজ্জামান ইমনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি বলেন, তাদের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের পারিবারিক শত্রুতা আছে। সেই জেরেই আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সবখবর/ নিউজ ডেস্ক

নিউজটি শেয়ার করুন
Scroll to Top