মায়ের ব্যাংক থেকে টাকা স্বর্নালংকার ও জমি কৌশলে লিখে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া অভিযোগ ওঠেছে এক ছেলের বিরুদ্ধে।
বুধবার মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিজের বড় ছেলে আবুল হাসনাত রাসেলের বিরুদ্ধে মা হাজেরা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন। শুধু মায়ের সম্পদ নয় ভাইয়ে জমিও দখলে নিয়ে মারধর করাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে ওই রাসেলের বিরুদ্ধে।
বুধবার সকাল ১১ টার দিকে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের হরিরামপুর উপজেলার রাজরা গ্রামের মৃত জহুর আলীর ছেলে আবুল হাসনাত রাসেলের বিরুদ্ধে মায়ের সম্পতি লিখে নেওয়া, ছোট ভাই, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করাসহ সম্পতি দখল ও মারধরের অভিযোগ করেন তার স্বজনরা।
মা হাজেরা বেগম বলেন তিনি নিজে অসুস্থ্য হলে বড় ছেলে রাসেলের বাসায় দীর্ঘ দিন ছিলেন। ওই সময় বড় ছেলে তার স্বামীর অংশের নিজের ২০ শতাংশ ও পৈত্রিক ভাগের ঢাকার ৭ শতাংশ জমি কৌশলে লিখে নেয়। এছাড়া যৌথ একাউন্ট করে তার ৭ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা প্রতারনামূলক ভাবে তুলে নিয়েছে । বড় ছেলের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা শিল্পীর কাছে রাখা প্রায় ১০ ভরি স্বর্নালংকার তাকে ফেরত দেয়নি। এর পর বিষয়টি বুঝতে পেরে আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে বড় ছেলে সাথে মিমাংসার জন্য বসা হলে বড় ছেলে রাসেল সব কিছু স্বীকার করলেও কোনো কিছু ফেরত দিবে না বলে। এই ঘটনার পর ২০২৩ সালে ২৮ জানুয়ারি তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে তিনি তার ছোট ভাই আব্দুল মজিদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এছাড়া তার বড় ছেলে রাসেল ও ছোট ছেলে মিঠু দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলেন। ছেলেরা যৌথভাবে ঢাকায় জমি কিনেন। ওই জমি ছোট ছেলেকে না দিয়ে বড় ছেলে নিজের দখলে রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে আত্মীয় স্বজনরা রাসেলের বাসায় গিয়ে কথা বলতে গেলে উল্টো তাদের নামে মামলা দিয়েছে। ছেলের এই ধরণের আচরনে তিনি গত ২৮ আগস্ট হরিরামপুর থানায় মামলা করেছেন। মায়ের সাথে এধরণে প্রত্যারনার জন্য তিনি ছেলের শাস্তি দাবি করেন। বর্তমানে তিনি ছোট ছেলে মেহেদী হাসান মিঠুর সাথে রয়েছে।
রাসেলের মামা আব্দুল মজিদ বলেন তিনি নিজের টাকা ভাগ্নে রাসেলকে সৌদি নিয়ে গেছেন। ছোট ভাগ্নের সম্পতি দখল ও তার বাড়ি ভাংচুর করার ঘটনায় আমরা কয়েকজন আত্মীয় স্বজন রাসেলের বাড়িতে যাই। ওই সময় আমাদের সামনেই ছোট ভাগ্নে মিঠু ও তার স্ত্রী নার্গিসকে মারধর করে। নিজে মারধর করে উল্টো তাদের নামে মামলা করা হয়েছে। রাসেল নিজের মায়ের সম্পতি কৌশলে লিখে নিয়েছে ও ছোট ভাইয়ের সম্পতি দখলে নিয়েছে।
মেহেদী হাসান মিঠু বলেন, তার বড় ভাই রাসেল মায়ের সম্পতি কৌশলে লিখে নিয়ে মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তার বসত বাড়ি ভাংচুর ও যৌথ ক্রয় করা সম্পতি দখল করেছে। এছাড়া ৯টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের।
এবিষয়ে অভিযুক্ত আবুল হাসনাত রাসেল বলেন তার মা তাকে স্বেচ্ছায় সম্পতি লিখে দিয়েছে। মায়ের নামে যৌথ একাউন্ট ছিলো কিন্তু মায়ের কোনো টাকা ছিলো না। তার মামা আব্দুল মজিদ ও ছোট ভাই মিঠু তার মাকে কৌশলে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে এখন তার বিরুদ্ধে মাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক