ঐতিহ্যের সাক্ষী ধানকোড়া জমিদার বাড়ি

ঐতিহ্যের সাক্ষী ধানকোড়া জমিদার বাড়ি

ধানকোড়া জমিদার বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া গ্রামে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। এটি ঐ সময়কার জমিদারি ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ছিল। এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার নরসিংহ রায় চৌধুরী। তিনি এবং তার বংশধরেরা দিল্লি থেকে বাংলাদেশে এসে ধানকোড়া গ্রামে বসতি স্থাপন করে জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন।

নরসিংহ রায় চৌধুরী ছিলেন জমিদারি প্রতিষ্ঠার মূল নায়ক। তার পরবর্তী প্রজন্ম এই জমিদারি প্রথার ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। জমিদার নরসিংহ রায় চৌধুরীর পুত্র গিরিশগোবিন্দ রায় চৌধুরী ছিলেন তার উত্তরসূরি। এরপর গিরিশগোবিন্দের পুত্র হেমচন্দ্র রায় চৌধুরী জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হেমচন্দ্র রায়ের তিন পুত্র ছিলেন—অমূল্যচন্দ্র, বীরেনচন্দ্র, এবং নির্মলচন্দ্র রায় চৌধুরী। তাদের হাতেই জমিদারির কার্যক্রম পরিচালিত হত, এবং তারা ধানকোড়া এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজেও অংশ নিতেন।

ধানকোড়া জমিদার বাড়ির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল এখানকার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়। জমিদার হেমচন্দ্র রায় চৌধুরী তার বাবা গিরিশগোবিন্দ রায় চৌধুরীর নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন, যা এখনো এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জমিদার বংশের আওতায় মোট ২৪টি কাছারি ছিল, যা তাদের প্রভাব প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল।

১৯৪৭ সালে ভারত-বাংলাদেশের বিভাজন পরবর্তী সময়ে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়। ১৯৫২ সালে, জমিদার বাড়ির বংশধররা ভারতে চলে যান, এবং এর সাথে ধানকোড়া জমিদার বাড়ির ঐতিহাসিক ভূমিকা শেষ হয়। তবে আজও এই জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

এটি শুধু একটি জমিদার বাড়ি নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা, যা আমাদের দেশের অতীতের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলির এক অসাধারণ প্রতিচ্ছবি।

সবখবর/ নিউজ ডেস্ক

নিউজটি শেয়ার করুন
Scroll to Top