ইউপি চেয়ারম্যানের সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Manikganj

সরকারি নানা সুবিধা পাইয়ে দেয়ার নামে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি দরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার ভুক্তভোগিরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে , ভাড়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের সাবেক  স্ত্রী ও স্থানীয় নেত্রী পরিচয়ে শামসুন্নাহার ছকিনা ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পরিবারের কাছ থেকে সরকারি বিভিন্ন সুবিধার  কার্ড ও পুলিশি তদবিরের কথা বলে ৫৯,০০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু দিনের পর দিন শামসুন্নাহার ছকিনার কাছে ধরনা দিয়ে তারা কিছু পাননি। টাকা ফেরত চাইলে উল্টো তাদের  ভয়ভীতি দেখান ও অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে শামসুন্নাহার ছকিনা।    

এ বিষয়ে ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ৬ নংওর্য়াডের ভাড়ারিয়া গ্রামের রাশেদা আক্তার  বলেন, আনুমানিক ৪ মাস পূর্বে বালিরটেক ব্রীজ হতে  তার মেয়েকে কে বা কাহারা তুলে নিয়ে যায়। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য শামসুন্নাহার ছকিনার সহায়তা নিলে তার কাছ থেকে  ১২,০০০ টাকা নেয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মেয়েকে উদ্ধার না হওয়ায় শামসুন্নাহার ছকিনার কাছে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো টাকা দাবি করেন। মেয়ে স্বেচ্ছায় যোগাযোগ করলে পরে শামসুন্নাহার ছকিনার কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করেন।

একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সূর্য বেগম বলেন, শিশু কার্ডের কথা বলে শামসুন্নাহার ছকিনা তার কাছ থেকে ২০০০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত শিশু কার্ড দেয় নি। শামসুন্নাহারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উল্টো বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

দিগন আলীর মেয়ে ডালিমা জানান মায়ের বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার জন্য  চার মাস পূর্বে শামসুন্নাহার ছকিনা  ৩০০ টাকা এবং সন্তানের জন্য শিশু কার্ড বাবদ ২০০০ টাকা নিলেও এখন পর্যন্ত কোন কার্ড দেয়নি। তিনি আরো জানান, একই দিন তার মামী হালিমার কাছ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ৩০০০ টাকা নেয়। এমনিক তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভাড়ারিয়া ও আশেপাশের এলাকা থেকে ১১ জনের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে শামসুন্নাহার ছকিনা ৩৩ হাজার টাকা ও শিশু কার্ড দেওয়ার কথা বলে ৮ জনের কাছ থেকে ১৬ হাজার ও মেয়েকে উদ্বার করার কথা বলে ১ জনের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা অর্থাৎ মোট ২০ জনের কাছ থেকে ৬১ হাজার টাকা নিয়েছেন।  

মঙ্গলবার রাশিদা আক্তার, ডালিমা, সূর্য বেগম, রোজিনা বেগম নামে কয়েকজন নারী মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সরকারি বিভিন্ন প্রকার ভাতা সহায়তার কথা বলে টাকা আত্মসাতকারী শামসুন্নাহার ছকিনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।

এব্যাপারে শামসুন্নাহার ছকিনার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক শুনেই রেগে যান। তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে যত খুশি অভিযোগ হোক এতে কিছুই আসে যায় না। পরে তিনি বলেন স্থানীয় আতিক নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মানুষজন দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।

ভাড়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, তার সাথে আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমার কোন সমস্যা নেই।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সবখবর/ নিউজ ডেস্ক

নিউজটি শেয়ার করুন
Scroll to Top