মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আগ শিমুলিয়া গ্রাম থেকে মোরশেদা আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ ওই গৃহবধুর স্বামী মিরাজ মোল্লাকে (৩৬) গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে।
নিহত মোরশেদা মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পৌলী গ্রামের মোকসেদ আলীর মেয়ে। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে শ্বশুর বাড়ি থেকে মোরশেদার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।
নিহত গৃহবধুর বাবা মোকসেদ আলী জানান, প্রায় ৮ বছর আগে জেলার শিবালয় উপজেলার আগ শিমুলিয়া গ্রামের মোতালেব মোল্লার ছেলে কাপড় ব্যবসায়ি মিরাজের সাথে তার মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার মেয়েকে এক ভড়ি স্বর্নালঙ্কারসহ একটি ফ্রিজ ও আলমারি দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই মিরাজ তার বাবা, মা ও ভাইয়ের কুপরামর্শে মোরশেদাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্য একাধিকবার শালিসও হয়েছে। তিন বছর আগে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে দুই ধাপে মিরাজকে দেড় লাখ টাকা দেয়া হয়। তারপরও মিরাজ মোরশেদাকে নির্যাতন করতো।
তিনি আরো জানান, মিরাজ ও তার পরিবারের সদস্যরা মোরশেদাকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
নিহতের ছোট বোন মুক্তি জানান, তার দুলাভাই পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে ছিল। পরকীয়ায় বাধা দেয়া ও যৌতুকের কারণেই তার বোনকে নির্যাতন করা হতো। পরকীয়া প্রেমিকার সাথে একাধিক ছবি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেসেজের স্ক্রিনসট বোন তাকে পাঠিয়েছিল। দাফনের আগে গোছলের সময় তার বোনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কবীর হোসেন জানান, মোরশেদার বাবা কিছুদিন আগে আমাকে তার মেয়েকে নির্যাতনের কথা জানিয়েছিল। ছেলের পরিবারের সাথে এনিয়ে বসারও কথা ছিল। তার আগেই মোরশেদাকে মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্টু বিচার দাবী করছি।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর এর আলম জানান, এঘটনায় আত্নহত্যার প্ররোচনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে চারজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের স্বামী মিরাজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক