স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশে প্রায় ৬৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ছাড়া ১২ হাজার লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রায় আড়াই হাজার লোক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমাদের চিকিৎসার যে প্রটোকল আছে, যে নিয়ম-নীতি আছে তা বিভিন্নভাবে উন্নত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দহর গ্রামে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেশি। এর কারণ, মশা এখন বেড়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে, এতে পানি বিভিন্ন স্থানে আটকে আছে, যেখানে মশা জন্ম নিচ্ছে, লার্ভা হচ্ছে। এটা কমানোর একমাত্র উপায়ই হলো মশা কমানো। মশা কম হলে কামড়াবে কম। এতে ডেঙ্গুতে কম আক্রান্ত হবে।
দেশের প্রায় সব জেলাতেই মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ি দেশে ৫৭টি এখন জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী আছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সব থেকে বেশি। যতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন তার ৬০ ভাগই হলো ঢাকায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনেক রোগী আছেন।
আমরা সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে মশা নিধনে বেশি বেশি স্প্রে করার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডেঙ্গু মোকাবেলা করে চলছি। যেখানে পানি জমে থাকে সেই পানি যেন সরিয়ে ফেলতে হবে। বিশেষ করে বাড়িঘরের আঙিনায় পানি জমে থাকে। আরেকটি দিক হলো যেখানে বহুতল ভবন আছে সেই ভবনেই বেশি ডেঙ্গু বেশি দেখা দিচ্ছে। যে সমস্ত নির্মাণাধীন ভবন আছে সেখানে পানি জমে থাকে। সেখান থেকেই ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিশ মশা ও লার্ভা জন্ম নিচ্ছে।’
ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে জনগণকেও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শুধু সরকার ডেঙ্গু মোকাবেলা করতে পারবে না। সকলেই যাঁর যাঁর আঙিনা পরিস্কার করতে হবে। যেখানে যেখা এডিশ মশা ও লার্ভা তৈরি হচ্ছে, সেখানে বেশি বেশি স্প্রে করতে হবে। লার্ভাগুলোকে ধ্বংস করতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর এ সময় ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেক ভালো ছিল। এ বছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। সামনে দুই থেকে তিন মাসে আরও বেশি ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে বাড়ে। কারণ আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। ইতিমধ্যে ডেঙ্গু অনেক বেড়েছে। আমরা যদি সজাগ না হই তাহলে আরও বেড়ে যাবে। আমরা সকলে মিলে কাজ করতে পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ’আমরা চাই না, একটি লোকও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করুক। যাঁরা একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে তাঁদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। কাজেই এ দিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। দেশের সকল হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিট করা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া আছে। স্যালাইনসহ যে ওষুধ প্রয়োজন তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসায় কোনো সমস্যা নেই।’
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক