মানিকগঞ্জ পৌরসভার উত্তর সেওতা এলাকায় গৃহবধু মাহমুদা হত্যা মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। এঘটনায় গৃহবধুর মেয়েসহ দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডও প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা হলেন, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকার জিন্দাপীর গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে মো: রাকিব হোসেন (২৪) ও নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার পূর্ব গোলমন্ডা গ্রামের মোঃ মাহফুজার রহমান (২০)।
অপরদিকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, গৃহবধুর মেয়ে জুলেখা আক্তার জ্যোতি (১৯) ও তার প্রেমিক ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ জিন্দাপীর গ্রামের শফিউর রহমান নাঈম (২৫)।
মাহমুদা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে মেয়েসহ মোট ৫ জনকে আসামী করে মানিকগঞ্জ থানায় মামলা করেছিলেন তার স্বামী জহিরুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারী ভোরে মাহমুদার মেয়ে জ্যোতি তার প্রেমিক নাঈমের সহায়তায় তার মাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ২০১৭ সালে ঢাকার ধামরাই উপজেলার গোলাকান্দা গ্রামের মারুফের সাথে জ্যোতির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর ঢাকার কেরাণীগঞ্জের নাঈমের সঙ্গে ফেসবুকে জ্যোতির প্রেম হয় এবং এক পর্যায়ে তারা শারীরিক সর্ম্পকে জড়িয়ে যায়।এরপর ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হলে জ্যোতি মানিকগঞ্জে বাবার বাড়ি চলে আসে। এরপর নাঈম মাঝে মাঝে জ্যোতির সঙ্গে ওই বাড়িতে অবৈধ মেলামেশা করলে জ্যোতির মা বিষয়টি বুঝতে পারে এবং জ্যোতিকে শাষন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জ্যোতিকে অনত্র বিয়ে দেওয়ার জন মনস্থির করলে জ্যোতি নাঈমের সহায়তা নিয়ে তার মাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন।
হত্যাকান্ডের পূর্বে আসামীরা জ্যোতির সহযোগিতায় তার ঘরে লুকিয়ে থাকে। পরে ভোরের দিকে তারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পরিকল্পনায় থাকে জ্যোতি ও নাঈম এবং তা বাস্তবায়ন করে রাকিব ও মাহফুজার। রাকিব ও মাহফুজারকে নাঈম দেড় লাখ টাকা দিয়ে ভাড়া করেছিলেন।
২০২০ সালের ৩১ মে মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই মোঃ শামীম আল মামুন সংশ্লিষ্ট আদালতে হত্যা মামলায় জড়িত থাকার দায়ে ৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় মোট ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জন ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদাণ করেন। পরে মামলার যুক্তিতর্ক শুনানী শেষে আদালত এই রায় দেন।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক