কোন সাম্রাজ্য থাকুক আর না থাকুক। হাতে তলোয়ার, মাথায় মুকুট পরে টগবগে ঘোড়ায় চড়ে ছুটে বেড়ায় নানা জায়গায়। স্থানীয় লোকজন তাকে রাজা বলেই ডাকেন। নাম তার আব্দুল কাদের।
তিনি রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন নৈশপ্রহরী। কাঁঠালবাড়িয়া বাজারের প্রহরী হিসেবে সারা রাত জেগে থাকেন তিনি।
তখন তার পরনে থাকে প্রহরীর পোশাক। আর দিনের বেলায় রাজার পোশাক পরে ঘুরে বেড়ান তিনি।
সত্তর বছর বয়স্ক আব্দুল কাদের দিনের আলোতে নিজেকে নৈশপ্রহরী বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন না। বরং রাজার পরিচয় দিতেই তার পছন্দ। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এভাবে রাজার বেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। ২০ বছর বয়সে যাত্রাপালায় রাজাকে দেখে রাজা হবার শখ জাগে তার। তারপর থেকেই রাজার পোশাক থেকে শুরু করে বাহারী তীর, ধনুক, চাবুক, তালোয়ার, ঘোড়া- সবকিছুই সংগ্রহ করেন তিনি। রাজত্ব না থাকলেও রাজা হয়ে যান আব্দুল কাদের।
আরো পড়ুন: মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে ক্ষমতায় যেতে চায় বিএনপি- মির্জা আজম
আবদুল কাদের একজন উজির এবং সেনাপতিও রেখেছিলেন। এই সেনাপতি ও উজির ১০ বছর আগে মারা গেছেন। তারপর আর নতুন করে কাউকে এই পদে রাখেননি। এই ৫০ বছরে ১৩টি ঘোড়ার সওয়ারি হয়েছেন কাদের। এখন যে ঘোড়াটি আছে তার নাম ময়ূরী। এই ময়ূরীকে নিয়ে তিনি ছুটে বেড়ান যেখানে-সেখানে। এলাকার লোকজনও তাকে রাজার মতো সমাদর করেন।
আবদুল কাদের বললেন, ছোটবেলায় যাত্রাপালায় রাজার অভিনয় দেখে আমার রাজা হতে শখ জাগে। সেই থেকেই আমি রাজার পোশাক আর ঘোড়া নিয়ে রাজা হয়ে গেছি। ৫০ বছর ধরেই আমি এই বেশ নিয়ে চলাচল করি দিনের বেলায়।
তিনি বলেন, আমি একজন উজির এবং সেনাপতিও রেখেছিলাম। ১০ বছর আগে তারা মারা যাওয়ায় নতুন করে আর কাউকে রাখিনি। ৫০ বছরে আমি ১৩ টি ঘোড়া ব্যবহার করেছি। বর্তমানে আমার ঘোড়াটির নাম ময়ূরী। এই ময়ুরীকে নিয়েই আমি নানা জায়গায় ছুটে বেড়াই।
স্থানীয়রা জানালেন, আবদুল কাদেরকে সবাই রাজার মতই সমাদর করে। তিনি মানুষ হিসেবেও অত্যন্ত ভাল। ১০ বছর ধরে তিনি বাজারের নৈশ প্রহরীর কাজ করছেন।
পারিবারিক জীবনে আবদুল কাদের তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। নাতি-নাতনিও আছে। কাঁঠালবাড়িয়া বাজার থেকে দুই মিনিট হেঁটে গেলে ইটের দেয়ালে টিনের ছাউনি দিয়ে ঘেরা বাড়িটিই তার রাজ প্রাসাদ।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক