খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মজিদ মোল্লার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও ছাত্র প্রতিনিধিরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষককে ধাওয়া দেয় এবং তার পদত্যাগের দাবি তুলে ধরেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছায়। সেখানে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ তুলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ওমর ফারুক, মেহেরাব, নাসিম, রমজান মাহমুদ, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফাহারিয়াজ আলম ফাহিম, রবিউল ইসলাম, ফাহাদ, অনিক, আকাশ, আংশিক মোল্লা, সিয়াম মোল্লা, সাব্বির, সাদিয়া, রিয়া, আঞ্জুমানসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী।
এর আগে, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমাদের একটাই দাবি—মজিদ মোল্লার পদত্যাগ। তিনি শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে অকৃতকার্য দেখিয়ে অর্থ আদায়, বিদ্যালয় ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ এবং দীর্ঘদিন ধরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক হেনস্থা করছেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে আমরা আগে কখনো কিছু বলতে সাহস পাইনি, কিন্তু এখন আমরা তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার চাই।”
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “মজিদ মোল্লা প্রধান শিক্ষক হিসেবে আসার পর থেকে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের কাছ থেকে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। নারী শিক্ষকদের সঙ্গে অনৈতিক প্রস্তাব এবং রাজি না হলে বরখাস্ত করার ঘটনা ঘটেছে। পিয়ন, দারোয়ান থেকে শুরু করে সকলকেই চাকরিতে ঢুকতে ঘুষ দিতে হয়েছে মজিদ মোল্লাকে। তার এই অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষার মান নষ্ট হয়েছে।”
ছাত্র প্রতিনিধি ওমর ফারুক বলেন, “মজিদ মোল্লা দীর্ঘ একযুগে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এসব টাকায় তিনি মানিকগঞ্জ শহরে আবাসিক সাততলা ভবন, বেওথা এলাকায় ৫ শতাংশ জমি এবং ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি এলাকায় ১৫ শতাংশ জমি কিনেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা উচিত এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।”
এদিকে, জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানিয়েছেন, “প্রধান শিক্ষক মজিদ মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”