বিস্ফোরণে দগ্ধ একজনের মৃত্যু, দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জ পৌর এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাসায় বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ রাশেদুল ইসলাম (৪৫) মারা গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনসিস্টটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ দিকে নিহতের দগ্ধ স্ত্রী ও শিশুসন্তানের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা স্বজনদের জানিয়েছেন। আজ বুধবার সকালে নিহত ওই ব্যক্তির বড় ভাই মো. রসুলদী ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি জানান।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার বলেন, অগ্নিদগ্ধ চারজনের একজন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনসিস্টটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে তিনি পরিবারের কাছ থেকে জেনেছেন।

পারিবারিক, পুলিশ এবং স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জে পৌরসভাধীন নারাঙ্গাই এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে মাংসের ব্যবসা (কসাই) করেন রাশেদুল ইসলাম। এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে থাকেন। গতকাল সোমবার ঝড়-বৃষ্টির কারণে ফ্ল্যাটের দরজা ও জানালা বন্ধ করে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে রাশেদুল ও মাংসের দোকানের কর্মচারী ফারুক হোসেন (৩৮) এবং অপর কক্ষে রাশেদুলের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (৩০) ও আড়াই বছরের সন্তান রিফাত ঘুমিয়ে পড়েন।

গতকাল মঙ্গলবার ভোর চারটার দিকে রাশেদুল ঘুম থেকে ওঠে দোকানে যাওয়ার জন্য আমাকে ঘুম থেকে উঠতে ডাকাডাকি করেন। ঘুম থেকে ওঠে তাঁরা কক্ষের ভেতর কিছুটা বিকট গন্ধ অনুভব করি। এ সময় রাশেদুল সিগারেটে আগুন ধরানোর জন্য দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর পরপরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় ফ্ল্যাটের একটি কক্ষের দেয়াল ধসে যায় এবং দরজা-জানালা ছিটকে আশপাশে যায়। এতে রাশেদুল, তাঁর স্ত্রী সোনিয়া, শিশুসন্তান রিফাত ও দোকানের কর্মচারী ফারুক দগ্ধ হন। তাঁদের জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে গুরুতর দগ্ধ রাশেদুল এবং তাঁর স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনসিস্টটিউটে পাঠানো হয়। দগ্ধ ফারুককে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আজ সকাল নয়টার দিকে নিহত রাশেদুলের বড় ভাই মো. রসুলদী প্রথম আলোকে বলেন, গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় তাঁর ছোট ভাই, ভাইবউ ও ভাতিজাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনসিস্টটিউটে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় গতকাল বিকেলে তাঁর ভাইকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁর ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর ভাইবউ ও ভাতিজাকেও ওই হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ ফারুকে হোসেন বলেন, তিতাস গ্যাসের লাইনে গ্যাস না থাকায় গত সোমবার সংযোগ চালু রেখে সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে কক্ষের ভেতর উৎকট গন্ধ ছড়ালেও আমরা তা বুঝতে পারিনি। দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর পরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দলনেতা (লিডার) বশির আহমেদ বলেন, রাতের বেলা দরজা-জানালা বন্ধ করে গ্যাসের লাইন চালু রাখতে পারে। কোনো কারণে আগুন জ্বালানোর পর বদ্ধ কক্ষ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

সবখবর/ নিউজ ডেস্ক

নিউজটি শেয়ার করুন
Scroll to Top