নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের অভিজ্ঞ কৃষক মো. শাহজাহান (৬২) দীর্ঘ ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে কৃষিকাজে যুক্ত রয়েছেন। নিজের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি একাধিক সফলতা অর্জন করেছেন। বর্তমানে, তিনি তার কৃষিকাজের মাধ্যমে অর্জিত আয়ে নিজের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতা করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সম্প্রতি, শাহজাহান মিজমিজি বিলে ১৯০ শতাংশ জমিতে লালশাক, লাউশাক এবং অন্যান্য শাক চাষ করেছেন। তাঁর আশা, এই মৌসুমে অন্যান্য বছরের তুলনায় লাভের পরিমাণ অনেক বেশি হবে। শাহজাহান শুধু মৌসুমি কৃষক নন, বরং বছরজুড়ে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষ করে থাকেন, যার মধ্যে লাউশাক, লালশাক, পুঁইশাক, মুলাশাক ও নাপা শাক অন্তর্ভুক্ত। প্রতি মাসে ৮ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়ে তিনি তাদের মাসিক বেতন হিসেবে ১৮-২০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
তাঁর জীবনে পড়াশোনা সীমিত হলেও, কৃষির প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে তিনি কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন। ১৯৮১ সালে ঢাকায় এসে সিদ্ধিরগঞ্জে বসবাস শুরু করেন এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের জমি কিনে একটি পরিবার প্রতিষ্ঠা করেন। শাহজাহান বর্তমানে তার বড় ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছোট মেয়ে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ছেন।
এছাড়া, ৪টি জমিতে শাক-সবজি চাষ করে গত তিন বছরে তিনি ১ লাখ টাকা খরচ করেছেন এবং আশা করছেন এই মৌসুমে তার আয় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত পৌঁছাবে। ফলন ভালো হওয়ার কারণে তিনি আশাবাদী যে, এবার লাভ আরও বেশি হবে। শাহজাহান বলেন, “আমার চাষাবাদে এই বছর ফলন ভালো হয়েছে এবং শাক নষ্ট হয়নি। তাই লাভের আশা অনেক বেশি।”
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা হাসনাত বলেন, “বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জে কৃষকরা নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদ করছেন। আমরা নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সহায়তা প্রদান করছি।”
শাহজাহানের কঠোর পরিশ্রম ও পরিকল্পনার ফলশ্রুতিতে তিনি কেবল নিজে সফল হয়েছেন, বরং তাঁর সন্তানদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্নও পূর্ণতা লাভের পথে।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক