গ্রাম সাধারণত কয়েকটি বাড়ি নিয়ে গঠিত, কিন্তু ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উমানাথপুর গ্রামটি একেবারেই ব্যতিক্রম। এখানে রয়েছে মাত্র একটি বাড়ি, এবং সেই বাড়িতেই বসবাস করছেন শুধুমাত্র দুইজন মানুষ। যে গ্রামে মাত্র দুইজন মানুষ বসবাস করে, সেটি বর্তমানে এলাকার মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
উমানাথপুর গ্রামটির নামকরণ হয় ১৯১৬ সালে, ব্রিটিশ আমলে উমানাথ চৌধুরীর নামানুসারে। তবে তখন এখানে কোনো মানুষের বসবাস ছিল না। পরবর্তীতে, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান শাসনামলে সিরাজুল ইসলামের বাবা রমজান আলী এই বাড়িটি নির্মাণ করেন। তখন থেকেই এই গ্রামে মানুষ বসবাস শুরু করেন। সিরাজুল ইসলামের একমাত্র ছেলে শরিফুল আলম এবং মেয়ে ফাহিমা নাসরিন সুমি গ্রামে থাকতেন, কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসে শরিফুল আলম ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মেয়েকে বিয়ে দিয়ে খুলনায় পাঠানো হয়। তাই বর্তমানে সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মানোয়ারা বেগম একমাত্র বাসিন্দা হিসেবে এই গ্রামে বসবাস করছেন।
আরো পড়ুন: ৪৪ কেজির বাঘাইর, বিক্রি ৪৮ হাজারে
এই গ্রামে একটি বাড়ি, দুটি বসতঘর, একটি গোয়ালঘর, একটি পুকুর এবং অনেক গাছগাছালি রয়েছে। বাড়ির একমাত্র প্রবেশ পথ একটি কাঁচা মেঠোপথ। গ্রামটির পাশেই ব্রহ্মপুত্র নদ অবস্থিত। এটি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১২-১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উমানাথপুর গ্রামটি ভাইরাল হয়েছে এবং গ্রামটি দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসছেন। ‘জনতার ঈশ্বরগঞ্জ’ নামক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দুটি বৃক্ষরোপণ করেছে এই গ্রামের একমাত্র বাসিন্দাদের নামে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার জানিয়েছেন, সরকার গ্রামটির রাস্তাঘাট উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে এবং শিগগিরই গ্রামটিতে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
যে গ্রামে মাত্র দুইজন মানুষ বসবাস করে, সেটি এখন বাংলাদেশের একটি বিরল ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে, যা দেখতে দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ আসছেন।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক