মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশ দিয়ে যাতায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়ে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলা এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় প্রায় তিন শতাধিক বিক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা। তারা জেলা প্রশাসকের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, সাটুরিয়ার গোলড়া গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একটি সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করতেন। সড়কটি তারাসিমা অ্যাপারেলস ও পেয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের ভেতর দিয়ে গ্রামের দিকে চলে গেছে।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান দুটির পক্ষ থেকে রাস্তাটির মুখে দেয়াল তুলে দেওয়া হয়, ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় স্থানীয়দের চলাচল। এতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
গত ২৯ জানুয়ারি ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ছয় ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও কোনো সমাধান না আসায় আজ সকালেই তারা ডিসি অফিস চত্বরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেন।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলতে প্রতিনিধি দল পাঠানো হলে, তিনি কোনো আলোচনা না করেই অফিস ত্যাগ করেন। এতে বিক্ষোভকারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং কয়েক ঘণ্টা ধরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখেন।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক পুনরায় এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “রাস্তা নিয়ে এলাকাবাসীর ভোগান্তি আমরা জানি এবং বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। দুইটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ওই সড়কটি বন্ধ হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের চলাচলে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা অগ্রাহ্য করা যায় না।”
তিনি আরও জানান, “আমরা শিগগিরই এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তারাসিমা অ্যাপারেলস ও পেয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড—এই দুই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব। তাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে রাস্তা উন্মুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টির একটি টেকসই ও শান্তিপূর্ণ সমাধান আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে চাই।”