মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডি নির্বাচনে অবৈধ ভোটার তালিকায় তফসিল ঘোষনাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে মাদ্রাসার গভর্নিং বডি নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও নানা সমালোচনা ।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) মানিকগঞ্জ সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে নির্বাচনে প্রকাশিত ভোটার তালিকা অবৈধ মর্মে ঘোষণামূলক দেওয়ানী মামলা করেছেন কাজী আব্দুস সালাম নামের এক অভিভাবক সদস্য প্রার্থী।
মামলায় মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ঘোষিত নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, গভর্নিং বডির সভাপতি মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ দুইজন শিক্ষককে বিবাদী করা হয়েছে। কাজী আব্দুস সালাম মানিকগঞ্জের তেরদোনা এলাকার কাজী ফজলুল করিমের ছেলে ও ওই মাদ্রাসার ৫ম শ্রেনীর ছাত্র কাজী ফায়াজের পিতা।
মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ পৌর শহরে ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা । প্রতিষ্ঠানটি কামিল (মাস্টার্স) পর্যন্ত হওয়ায় সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী গভর্নিং বডি দ্বারা পরিচালিত হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এডহক কমিটি দ্বারা পরিচালিত থাকাবস্থায় গত ২৪ জানুয়ারি তফশীল ঘোষনা করা হয়। সেই সাথে ভোটার হিসেবে ৯১৫ জন ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর ৬.১ ধারার ঘ অনুযায়ী কামিল (মাস্টার্স) মাদ্রাসার শ্রেনী সংখ্যা ১৭টি। কিন্তু ১৭ টি শ্রেনীর পরিবতে প্লে শ্রেনিসহ ১৮ টি শ্রেনী অর্ন্তভূক্ত করে নির্বাচনে ৯১৫ জন ভোটারের তালিকা প্রকাশ করে। এর মধ্যে প্লে শ্রেনির ৪০ জন ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবকদের বে আইনি ভাবে ভোটার করা হয়েছে । এছাড়া ইতিপূর্বেও প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি,চাদাঁবাজী, মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকুরিতে যোগদান,১ম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে ২য় বিবাহ করাসহ নানা অভিযোগ উঠে। আদালতে মামলা হলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছিলো।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও অভিযোগকারী কাজী আব্দুস সালাম বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি গভর্নিং বডি নির্বাচনের তফশীল প্রকাশিত হলে তিনি ৫ম শেনেীর ছাত্র (রোল-২৯) কাজী ফায়াজের অভিভাবক হিসেবে (৭১৭ নং ভোটার) অভিভাবক সদস্য প্রার্থী হিসেবে গত ৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে নির্বাচনে প্রস্তুতির জন্য ভোটার তালিকা সংগ্রহ করে দেখা যায় সরকারি নিয়ম না মেনে প্লে শ্রেনীর ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকদের ভোটার করা হয়েছে। এতে নির্বাচনে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া আদালতের আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ও মামলার ১ম বিাবদী মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ঘোষিত নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, নির্বাচনে যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্রীক আদালতে মামলা ও নানা অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনো কোন নোটিশ পাইনি । এছাড়া তাহার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন তা সত্য নয়।
উল্লেখ্য, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহন।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক