যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ কিছু নির্দিষ্ট দেশের ওপর আরোপিত শুল্কের হার হ্রাস করেছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) ওয়াশিংটন সময় অনুযায়ী হোয়াইট হাউস থেকে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেওয়া হয়। রয়টার্সের বরাতে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানায়, নতুন শুল্ক কাঠামো অনুযায়ী আফগানিস্তান, আঙ্গোলা, ক্যামেরুন, চাঁদ, কোস্টা রিকা, আইভোরি কোস্ট, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইকুয়েডর, গিনি ও বসনিয়ার পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, আলজেরিয়ার পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ, কানাডার ৩৫ শতাংশ, ভারতের ২৫ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর জন্য শুল্ক হার শূন্য শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, থাইল্যান্ডের জন্য ১৯ শতাংশ এবং ব্রাজিলের পণ্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক বাণিজ্য ভারসাম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। সেই সময় একটি অনুষ্ঠানে তিনি পারস্পরিক শুল্ক কাঠামোর তালিকা প্রকাশ করেন, যেখানে দেখানো হয় কোন দেশ কত হারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে।
উক্ত তালিকা অনুসারে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর গড়ে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যার পাল্টা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ৩৭ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণ করে। পরবর্তীতে, ৯ এপ্রিল এই শুল্ক ব্যবস্থা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয় এবং দেশগুলোকে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়।
তিন মাস পর, ৯ জুলাই সময়সীমা শেষ হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের তৎকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেন যে পাল্টা শুল্ক ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়নি।
এদিকে, শুল্ক বিষয়ে আলোচনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (USTR) সঙ্গে তিন দিনব্যাপী বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। এই প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এছাড়াও, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক