জীবনে কিছু মানুষ আসে যারা “বন্ধু” পরিচয়ে থাকলেও, তাদের আচরণে সে বন্ধুত্বের কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা বন্ধুর মতো কথা বলে, হাসে, খোঁজ নেয়—কিন্তু একটু খেয়াল করলেই বুঝবেন, তারা আসলে আপনার মঙ্গল চায় না। বরং তারা আসে নিজেদের স্বার্থে, প্রয়োজন ফুরোলেই দূরে সরে যায়। কীভাবে বুঝবেন, কে সত্যিকারের বন্ধু আর কে ‘বন্ধুর মুখোশ পরা কেউ’? চলুন, কিছু লক্ষণ দেখে নিই—
১. শুধু ভালো সময়েই থাকে পাশে
যখন সবকিছু ভালো চলছে, আপনি সফল, নিশ্চিন্ত—তখন তাদের দেখা মেলে, ফোন আসে, গল্প জড়ে। কিন্তু বিপদে বা কঠিন সময়ে তারা নেই। কোনো সহানুভূতি নেই, খোঁজও নেই। এমন মানুষেরা ‘সুযোগসন্ধানী বন্ধু’—তারা পাশে থাকে শুধু তখনই, যখন আপনার পাশে থাকা তাদের জন্য সুবিধাজনক।
২. আপনার সাফল্যে গা জ্বলে
একজন সত্যিকারের বন্ধু আপনার প্রতিটি অর্জনে খুশি হয়, গর্ববোধ করে। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন, যারা আপনার সাফল্য দেখলে মন থেকে হাসতে পারেন না। তারা হয়তো প্রশংসার ভান করবে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঈর্ষায় পুড়ে যায়। মাঝেমধ্যে এমন মন্তব্য ছুঁড়ে দেবে, যাতে আপনার আনন্দ মলিন হয়ে যায়। এমন আচরণ কারও কাছ থেকে পেলে, বুঝে নিন—সে আপনার মঙ্গল চায় না।
৩. সব সময় নিজেকেই গুরুত্ব দেয়
যে সম্পর্কের মধ্যে কেবল একপক্ষ কথা বলে, অন্যপক্ষ শুধু শুনে—সেখানে বন্ধুত্ব থাকে না, থাকে প্রভাব বিস্তারের খেলা। যদি কেউ সবসময় শুধু নিজের কথা বলে, আপনার অনুভূতি, মতামত বা সমস্যার জায়গা বোঝার চেষ্টা না করে—তাহলে সে বন্ধুর চেয়ে একজন আত্মকেন্দ্রিক ব্যক্তি। আর আত্মকেন্দ্রিক মানুষের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়া যায় না।
৪. আপনার খোঁজ নিতে আগ্রহী নয়
একজন প্রকৃত বন্ধু শুধু আপনার ভালো সময়েই নয়, সব সময়েই খোঁজ রাখে। ব্যস্ততা থাকতেই পারে, কিন্তু আগ্রহ থাকলে একজন মানুষ সময় করে নেয়। যদি দেখেন, সবসময় আপনিই আগে খোঁজ নিচ্ছেন, সে কখনো নিজে থেকে ফোন করে না বা মেসেজ দেয় না—তাহলে আপনি একতরফা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখছেন। বন্ধুত্ব কখনো একতরফা হয় না।
শেষ কথা:
সবাইকে বন্ধু ভাববেন না। কেউ আপনাকে সম্মান না দিলে, তার সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার দায় আপনার না। জীবনে সম্পর্ক অনেক আসবে-যাবে, কিন্তু সেগুলোর মধ্যে কাদের আপনি হৃদয়ে জায়গা দেবেন—সেই বাছাইটা আপনাকেই করতে হবে। বন্ধু নির্বাচনের আগে ভাবুন, আপনি যেন আরেকজনের ‘অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক সময়’ না হন।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক