বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক সম্পদের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে। এসব সম্পদ শুধু তাদের অর্থনীতির ভিত্তি নয়, বৈশ্বিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ উৎসও। প্রাকৃতিক সম্পদের অর্থমূল্য বিবেচনায় ধনী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
রাশিয়া: বিশাল ভৌগোলিক আয়তনের কারণে রাশিয়া প্রাকৃতিক সম্পদে বিশ্বের শীর্ষস্থান দখল করেছে। দেশটির সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৭৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি খনিজ সম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং বিরল খনিজ ধাতুর বিপুল ভাণ্ডার রয়েছে। এছাড়া রাশিয়ায় স্বর্ণের বিশাল মজুত এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুতে বিশ্বে অগ্রগণ্য।
যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক সম্পদ দেশটির অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করেছে। দেশটির সম্পদের মূল্য ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এখানে কয়লা, কাঠ, প্রাকৃতিক গ্যাস, স্বর্ণ এবং কপারের মজুত উল্লেখযোগ্য। দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সৌদি আরব: বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে বিশাল রাজস্ব আয় করে থাকে। এর সম্পদের মোট মূল্য প্রায় ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার। দেশটির অর্থনীতির মূল ভিত্তি তেলের ওপর নির্ভরশীল, যা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বড় ভূমিকা রাখে।
কানাডা: কানাডা প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ একটি দেশ। এর সম্পদের মূল্য প্রায় ৩৩ ট্রিলিয়ন ডলার। দেশটির প্রধান সম্পদগুলোর মধ্যে তেল, ইউরেনিয়াম, কাঠ, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ফসফেট উল্লেখযোগ্য। প্রাকৃতিক সম্পদের বৈচিত্র্য কানাডার অর্থনীতিতে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে।
ইরান: মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদে ধনী দেশ ইরান। দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের মোট মূল্য ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার। তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ইরানের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি।
চীন: বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের প্রাকৃতিক সম্পদের মূল্য প্রায় ২৩ ট্রিলিয়ন ডলার। কয়লা, কাঠ, তেল এবং বিরল খনিজ ধাতু চীনের মূল সম্পদ। শিল্প উৎপাদন এবং বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের জন্য চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রাজিল: ব্রাজিলের প্রাকৃতিক সম্পদের মূল্য প্রায় ২২ ট্রিলিয়ন ডলার। এখানে স্বর্ণ, ইউরেনিয়াম, লৌহ আকরিক, কাঠ এবং তেলের মজুত রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি এর প্রাকৃতিক সম্পদ। দেশটির সম্পদের মোট মূল্য প্রায় ২০ ট্রিলিয়ন ডলার। কয়লা, কপার, লৌহ আকরিক, স্বর্ণ এবং ইউরেনিয়ামের মতো সম্পদ এর প্রধান চালিকা শক্তি।
ইরাক: ইরাকের প্রাকৃতিক সম্পদের মূল্য ১৬ ট্রিলিয়ন ডলার। দেশটির অর্থনীতি তেলের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া এখানে ফসফেটের উল্লেখযোগ্য মজুত রয়েছে।
ভেনেজুয়েলা: তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার ভেনেজুয়েলাকে প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ করেছে। দেশটির সম্পদের মোট মূল্য প্রায় ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার। লৌহ আকরিকও এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।
প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এই দেশগুলো তাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারেও প্রভাব বিস্তার করে। তবে এসব সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক