মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামে ব্যক্তিগত জমিতে দেয়াল নির্মাণ করে পায়ে হাটার পথ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বজলুর রশিদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাওযায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় কিছু পরিবার। বন্ধ পথ চালুর দাবীতে জেলা প্রশাসকের কাছে গণস্বাক্ষর দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
গত ২৩ এপ্রিল জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লার কাছে গণস্বাক্ষর দিয়েছেন বাঘুটিয়া গ্রামের ৬৩ জন ভুক্তভোগী।
জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো গণস্বাক্ষর দেয়া পত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত ওয়াজ উদ্দিন বেপারীর ছেলে বজলুর রশীদের জমির আইল দিয়ে প্রায় ১০০ বছর ধরে কিছু পরিবার চলাচল করতো। সম্প্রতি তিনি তার জমিতে দেয়াল তুলেছেন। এতে করে স্থানীয়দের পায়ে হাটার পথটি বন্ধ হয়ে যায়। পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বেশ কিছু পরিবার।
ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা কয়েক প্রজন্ম ধরে এই রাস্তা ব্যবহার করছি। কখনো কোনো বাধা পাইনি, কিন্তু এখন দেয়াল তুলে চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী মানিক মিয়া জানান, আগে এই রাস্তার পাশাপাশি আমরা পাড়ার উত্তর দিক দিয়েও রাস্তা ব্যবহার করতাম, কিন্তু সেই রাস্তা ভাঙ্গনের কারণে এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এই রাস্তা ছাড়া লোকজনের চলাফেরা এবং কৃষি সরঞ্জামসহ উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমরা এর একটি সঠিক সমাধান চাই।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা আফরোজা সুলতানা। তিনি বলেন, এই রাস্তা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে সমস্যায় পড়ছে, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। কেউ মারা গেলে লাশ কবরস্থানে নিতে পর্যন্ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এটি আমাদের মানবিক বিপর্যয়ে ফেলেছে।
স্কুল শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বজলুর রশীদের সাথে দফায় দফায় বসেও কোন সমাধান হয়নি। তিনি উদ্দেশ্য প্রণোনিত হয়ে আমাদের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। কোন উপায় না পেয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি।
অভিযুক্ত বজলুর রশিদ দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কিছু পরিবার আমার জমির আইল দিয়ে যাতায়াত করতো। আমি আমার ব্যক্তিগত জমিতে স্থাপনা করব, যেকারণে আমি আমার জমিতে দেয়াল নির্মাণ করেছি। আমার জমি দিয়ে আরো পথ আছে, সেগুলো ব্যবহার করলে আমার কোনো সমস্যা নেই। তবে, ‘একশ বছর ধরে ওই জমিতে পথ ছিল’ কথাটি সঠিক নয়। তারা সেখানে বাড়ি করেছে ২০-২৫ বছর আগে।
বিষয়টি নিয়ে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।