নিজামের মিষ্টি

নিজামের মিষ্টি

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী এলাকায় তৈরি হওয়া নিজামের মিষ্টি আজ জেলার সীমানা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি ৫৮ বছরের পুরনো ঐতিহ্য, যা স্থানীয় মিষ্টি প্রস্তুতকারক মো. নিজামুদ্দিনের নামে নামকরণ করা হয়েছে। তেরশ্রী বাজারের এই মিষ্টির কারখানায় প্রতিদিন তৈরি হয় সুস্বাদু মিষ্টি, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং দেশের অন্যান্য ভোজনরসিকদের কাছেও বিশেষ পরিচিত।

নিজামের মিষ্টির ইতিহাস ১৯৬৫ সালের। তখন নিজের চায়ের দোকানে অতিরিক্ত দুধ থেকে একটি বিশেষ ধরনের মিষ্টি তৈরি করেন নিজামুদ্দিন। সেই মিষ্টির স্বাদে মুগ্ধ হয়ে স্থানীয়রা প্রশংসা করেন। পরের বছর ১৯৬৬ সালে তেরশ্রী কলেজের একটি অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানাতে নিজামের মিষ্টি পরিবেশন করা হয় এবং তা সবার কাছে প্রশংসিত হয়। এরপর ধীরে ধীরে এই মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।

আরো পড়ুন: জামালপুরের ঐহিত্যবাহী মিল্লি

মিষ্টির প্রস্তুতি প্রক্রিয়া খুবই বিশেষ। তেরশ্রী বাজার থেকে দুধ সংগ্রহ করে প্রথমে ছানা তৈরি করা হয়। এরপর সেই ছানা চিনির শিরায় জ্বাল দিয়ে সাধারণ মিষ্টি তৈরি করা হয়। ঠান্ডা হলে মিষ্টির ওপর দুধের মাওয়ার প্রলেপ দেওয়া হয়, যা নিজামের মিষ্টি নামকরণে পরিচিত হয়ে ওঠে।

নিজামের মিষ্টি ছাড়াও কারখানায় তৈরি হয় মালাই চপ, শাহি চমচম, কিরিম চমচম, শাহি কদম মিষ্টি, সন্দেশ এবং আফলাতুন ছানা। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ১৮০ কেজি মিষ্টি তৈরি হয়, তবে শীতকালে এই পরিমাণ ২২০ থেকে ২৫০ কেজিতে পৌঁছে। বর্তমানে মিষ্টির দুটি শোরুম রয়েছে—একটি জেলা শহরের খালপাড় এলাকায় এবং অন্যটি ঘিওরের পঞ্চ রাস্তার মোড় এলাকায়। এখানে প্রতি কেজি শুকনা মাওয়া ৪০০ টাকা, শাহি চমচম ৬০০ টাকা, কিরিম চমচম ৪০০ টাকা এবং শাহি কদম ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।

নিজামের মিষ্টি শুধু মানিকগঞ্জবাসীর প্রিয় খাবার নয়, এটি জামানার একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য, যা বছরের পর বছর ধরে স্বাদ ও মানের নিখুঁত সমন্বয়ে স্থান করে নিয়েছে।

সবখবর/ নিউজ ডেস্ক

নিউজটি শেয়ার করুন
Scroll to Top