নাক ডাকা একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকেই ঘুমের মধ্যে অনুভব করেন। এটি একদিকে যেমন ব্যক্তির স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে, তেমনি পারিপার্শ্বিক মানুষেরও বিশ্রামে বিঘ্ন ঘটায়। ডাক্তারদের মতে, নাক ডাকার পেছনে বেশ কিছু শারীরিক কারণ রয়েছে। কলকাতার পিজি হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অরিন্দম দাস জানান, নাক ডাকার মূল কারণ হ’ল শ্বাসনালীর পথে বাধা সৃষ্টি হওয়া, যার ফলে টার্বুলেন্ট এয়ারের সৃষ্টি হয় এবং নাক ডাকার শব্দ শোনা যায়।
নাক ডাকার কারণ : ডা. অরিন্দম দাস বলেন, নাক ডাকার বেশ কিছু প্রধান কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
১. ওজন বৃদ্ধি (ওবেসিটি): অতিরিক্ত ওজন শরীরের বিভিন্ন অংশে চাপ সৃষ্টি করে, যা শ্বাসনালীতে বাধা দেয়।
২. নাকের হাড় বাঁকা: এটি শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করে, ফলে নাক ডাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৩. গলায় মাংসপেশী স্ফীত হওয়া: গলার পেশী স্ফীত হলে, শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
৪. জিহ্বার নিচের অংশে স্ফীতি: এটি শ্বাসনালীতে অবরোধ সৃষ্টি করে, যার ফলে নাক ডাকা হয়।
নাক ডাকা কমানোর সহজ উপায়: নাক ডাকা বন্ধ করতে কয়েকটি সহজ এবং কার্যকরী পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
১. এক পাশে শোওয়া: যারা তীব্র নাক ডাকেন, তাদের জন্য এক পাশ ফিরে শোওয়া উপকারী হতে পারে। এতে শ্বাসনালীর পথ খুলে যায়, ফলে নাক ডাকার সমস্যা কিছুটা কমে।
২. উঁচু বালিশে শোওয়া: একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করলে শ্বাসপ্রশ্বাসের পথে সুবিধা হয়, ফলে নাক ডাকার সম্ভাবনা কমে যায়।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান করা: শরীরে পানির ঘাটতি হলে নাক ডাকার সমস্যা বেড়ে যায়। তাই সবসময় হাইড্রেটেড থাকলে এই সমস্যা কমে।
৪. ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান শ্বাসনালীতে বাধা সৃষ্টি করে, যা নাক ডাকার কারণ হতে পারে।
৫. অতিরিক্ত ওজন কমানো: অতিরিক্ত ওজন নাক ডাকার অন্যতম কারণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমালে সমস্যা অনেকটাই কমে।
ঘরোয়া উপায়:
১. পুদিনা, দারুচিনি ও রসুনের মিশ্রণ: প্রতিদিন এই উপাদানগুলো দিয়ে কুলকুচি করলে নাক ডাকার সমস্যা কমে।
২. অলিভ অয়েল: ঘুমানোর আগে এক ফোঁটা অলিভ অয়েল নাকে দেওয়ার মাধ্যমে নাকের ভেতর পরিষ্কার হয় এবং নাক ডাকা কমে।
৩. ঘি: সামান্য গরম ঘি নাকে দিলে শ্বাসপ্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার হয়ে নাক ডাকা কমে।
৪. হলুদ: গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খেলে নাক ডাকার সমস্যা কমে যায়।
সবখবর/ নিউজ ডেস্ক