বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করলে তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। তিনি বলেন, দেশের নাগরিকরা গত দেড় দশক ধরে কেবল ক্ষমতা বদলের জন্য আন্দোলন করেননি, বরং তারা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জীবন দিয়েছেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকার আশুলিয়ায় বিএনপি আয়োজিত ‘নারকীয় জুলাই’ প্রতিবাদ সভায় ভার্চুয়াল বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা কারও হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য নয়, বরং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। যে কোনো সরকার যদি দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই জনগণের কণ্ঠস্বর শোনার মানসিকতা থাকতে হবে।”
নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “নাগরিকদের রাজনৈতিক ক্ষমতা চর্চার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো নির্বাচন। একজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সব সময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষেই কথা বলে এসেছে। আমি বিশ্বাস করি, স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা গেলে সরকারে তাদের মতামত প্রতিফলিত হবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও প্রতিষ্ঠিত হবে।”
তিনি ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে’ আশুলিয়ায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সেদিন সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ, বিশেষ করে সাভার-আশুলিয়ার পোশাক শ্রমিকরা। তাদের হত্যা করে লাশ গুম কিংবা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, যা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। এ বর্বরতা ইতিহাসের নির্মমতম অধ্যায়গুলোর একটি।”
তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট যখন স্বৈরাচারী শক্তি ক্ষমতা ছাড়ার পথে, তখনও আশুলিয়ায় চলছিল নির্মম গণহত্যা।”
তারেক রহমানের মতে, শ্রমজীবী মানুষেরা গত বছরের আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন নিজের স্বার্থের কারণে নয়, বরং গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার তাগিদে। তিনি বলেন, “যখন রাষ্ট্রে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা পায়, তখন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দিন আনে দিন খায় শ্রেণির মানুষ। তাই তাদেরই আগে রাস্তায় নামতে হয়।”
শেষে তিনি বলেন, “যদি রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থায় জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানো যায়, তবে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব। আর তখনই সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে।”