প্রযুক্তির উন্নয়নে ‘কাট-কপি-পেস্ট’ আজকাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। ইমেইল, মেসেজ, সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট, সংবাদপত্র কিংবা স্কুল-কলেজের প্রজেক্ট—সবক্ষেত্রেই এই ফিচারের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। সময় বাঁচানো এবং কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য এই টার্মগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
এই কার্যকরী টুলগুলির পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেন ল্যারি টেসলার। তিনি একজন উজ্জ্বল কম্পিউটার বিজ্ঞানী, যিনি ‘কাট’, ‘কপি’, এবং ‘পেস্ট’ কমান্ডগুলির আবিষ্কারক। ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তার প্রয়াণের মাধ্যমে আমরা তাকে স্মরণ করি, যিনি আমাদের ডিজিটাল বিশ্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন।
ল্যারি টেসলার ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক সম্পন্ন করার পর তিনি ‘জেরক্সে’ কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি প্রথমবারের মতো ‘কাট-কপি-পেস্ট’ শব্দগুলির উদ্ভাবন করেন, যা দ্রুত কম্পিউটারের অন্যতম জনপ্রিয় ফিচার হয়ে ওঠে।
আরো পড়ুন: স্মার্টফোনের অজানা ফিচার
আরো পড়ুন: ইউটিউব থেকে আয়ের ১২ পদ্ধতি
জেরক্স ছাড়াও, টেসলার বিভিন্ন বিশ্ববিখ্যাত টেক-জায়ান্ট যেমন অ্যাপল, অ্যামাজন, এবং ইয়াহুর সাথে কাজ করেছেন। স্ট্যান্ডফোর্ডের আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ল্যাবরেটরিতে গবেষণা চালানোর সময় তিনি ‘কমপেল’ নামে একটি সিঙ্গেল অ্যাসাইনমেন্ট ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরি করেন। পরবর্তীতে, জেরক্স-পালো অল্টো রিসার্চ সেন্টারে যুক্ত হয়ে তিনি ১৯৭০ সালে ‘কাট-কপি-পেস্ট’ কমান্ডটি আবিষ্কার করেন, যা আজকের ডিজিটাল যোগাযোগের মেরুদণ্ড।
টেসলারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, জেরক্সে থাকাকালীন তিনি ‘পেজমেকার’ সফটওয়্যারের আদলে একটি পেজ লে-আউট প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেন। এছাড়া, তিনি ‘নোটটেকার’ নামে প্রথম পোর্টেবল কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ডিজাইনও করেন, যা মোবাইল কম্পিউটিংয়ের দিশা দেখায়।
কিভাবে এলো কাট-কপি-পেস্ট—এই প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন আমাদের কাজকে সহজতর করেছে এবং ডিজিটাল যুগের সূচনা করেছে। ল্যারি টেসলারের এই অবদান আজও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গভীর প্রভাব ফেলছে, যা তার স্মৃতিকে চিরস্থায়ী করে রেখেছে।
প্রযুক্তি ডেস্ক