না ফেরার দেশে পাপিয়া সারোয়ার

না ফেরার দেশে পাপিয়া সারোয়ার

একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার ৭২ বছর বয়সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

পাপিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্বামী সারওয়ার আলম। তিনি জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর শিল্পীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং বনানী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়া সারোয়ার কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। তিনি শেষ মাসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং পরবর্তীতে তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি আমাদের মাঝ থেকে চিরতরে চলে যান।

আরো পড়ুন: গ্রামীণ ব্যাংকের ১৯ জনের নামে মামলা

পাপিয়া সারোয়ার ১৯৫২ সালের ২১ নভেম্বর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রসংগীতের প্রতি তার প্রবল আগ্রহ ছিল। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছায়ানটে ভর্তি হওয়ার পর তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতেও তালিম নেন। ১৯৬৭ সালে বেতার ও টিভিতে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে তার গানের যাত্রা শুরু হয়।

১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারতে যান। দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে তার ব্যতিক্রমী কণ্ঠ ও গায়কী শ্রোতাদের মাঝে বিশেষ প্রশংসিত হয়। রবীন্দ্রসংগীতের পাশাপাশি আধুনিক গানে তার সাফল্যও ছিল উল্লেখযোগ্য। বিশেষত, ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে জনপ্রিয়তা এনে দেয়।

আরো পড়ুন: প্রশাসনে আসছে বড় রদবদল

সংগীতবোদ্ধাদের মতে, আধুনিক গান বাছাইয়ে তার সচেতনতা ছিল অনেক বেশি, ফলে তার অ্যালবামের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। সর্বশেষ অ্যালবাম ‘আকাশপানে হাত বাড়ালাম’ প্রকাশ পায় ২০১৩ সালে।

পাপিয়া সারোয়ার তার গুণ ও প্রতিভার জন্য বহু পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ অর্জন করেন। ২০২১ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।

পাপিয়া সারোয়ার তার অসামান্য সংগীত প্রতিভা ও অবদান দিয়ে শ্রোতাদের মনে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন
Scroll to Top